বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৮, ২০২৪
মৌলভীবাজারে প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ
মৌলভীবাজারে প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

মৌলভীবাজারে প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

প্রতিষিদ্ধ প্রতিবেদক
প্রকাশের সময় : March 25, 2022 | অপরাধ

মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর এর উপ-সহকারী ইন্দুভূষন এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। রহিমপুর, পতনঊষার, মুন্সিবাজার ৩ ইউনিয়নের ভুক্তভোগীদের  সারি দীর্ঘ হচ্ছে। ভুলচিকিৎসা ও ভিজিট বানিজ্যে অনিয়ম দুর্নীতির কারণে খামারী ও সাধারণ মানুষদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ উত্তেজনা।   সরেজমিনে ৩ ইউনিয়নের ভুক্তভোগীদের সাথে আলাপ কালে তারা জানান,  সাধারণ মানুষের ডাকে উনি আসেন না, ৩০০-৪০০ টাকা ভিজিট দিতে হয়। সাধারণ মানুষের সাথে অশালীন ব্যবহার করেন।  বলরাম পুর এলাকার কৃষক লেবু মিয়া জানান, ইন্দু ভুষনের ভুল চিকিৎসায় আমার প্রায় ৩৫ হাজার টাকা দামের একটি গরু গত ১৭ মার্চ দিবগত রাত মারা যায়,  আমার ক্ষতিপূরণ কে দেবে, চিকিৎসার নামে হয়েছি অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন।  আমি ক্ষতিপূরণ চাই। রামেশ্বর এলাকার সজ্জাদ আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, আমার একটি গরুকে ভুল  চিকিৎসা দেওয়ার কারণে আমি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, অন্য একজন ডাক্তার আনতে গেলে তিনি  বাধা বিপত্তি দেন। ইন্দু ভুষনের কথায় কর্নপাত না করে শমশেরনগর থেকে চিকিৎসক এনে  চিকিৎসা করালে গরু টি সুস্থ হয়। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, গবাদিপশুর সমস্যায়  উনাকে ফোন দিলে উনি সময় মত আসেন না, আসলে তাকে ভিজিট বাবত-৩০০/৪০০ টাকা দিতে হয় এবং মুন্সিবাজারে উনার নিজস্ব ঔষধঘর থেকে ঔষধ কিনতে বাধ্য করেন। গবাদিপশুর চিকিৎসার প্রয়োজনে ফোন দিলে উনার ঔষধ ঘরের পাশের সেলুনের কর্মচারীকে পাঠিয়ে ইনজেকশনসহ চিকিৎসা দেয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন খামারী ও সাধারণ মানুষ। বিগত দিনে তার অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ একাধিক  মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত তিনি। সুত্র জানায়- ইন্দুভূষন বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্ণীতির অভিযোগে বিগত ২০১৮ সালে ভিলেজ ফিল্ড এ্যাসিষ্টেট থাকাকালীন সময়ে বড়লেখা উপজেলা পশু হাসপাতালে এবং ২০১৯ সালে শ্রীমঙ্গল প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরে বদলি হন। সর্বশেষ ২০২০ সালে কমলগঞ্জে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর এর উপ-সহকারীর হিসাবে পদায়িত হন। এলাকার একাধিক লোকজন জানান- প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর এর উপ-সহকারী ইন্দুভূষন পেশায় ডাক্তার হলেও, জনগনের সেবায় তিনি নিয়োজিত নন। নিজে কখনো এলাকায় গবাদী পশুকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন না। তার হুকুমে অসুস্থ গরু,ছাগলসহ বিভিন্ন গবাধি পশুর চিকিৎসা কার্যক্রম করেন, সুকেশ নামীয় একজন সেলুনের কর্মচারী । তিনি মুন্সিবাজারস্থ একটি ম্যানশনের হেয়ার ড্রেসারের ভিতরে চুলকাটার কাজ করেন। সেখানে সকল যাবতীয় ঔষধ বিক্রয় ও লেদদেন চলে। অভিযোগ উঠেছে, অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে গবাদী পশুকে ভ্যাকসিন, টিকা ও ইনজেকশন প্রদান করেন। পেশায় শীল ও অদক্ষতার কারণে অনেক গবাদী পশু ভূল চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছে। ডাক্তার ইন্দুভূষণ রহিমপুর, মুন্সী বাজার, পতনউষার ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ছিলেন। সরকারী সকল সুযোগ সুবিধা তিনি ভোগ করেছেন। কিন্তু জনগন সরকারী ঔষধ, চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত।  জবাবদিহিতা না থাকায় ডাক্তার ইন্দুভূষণ এবং সুকেশ এসব অনিয়ম ও দুর্ণীতি চালিয়ে আসছেন। এতো এতো অনিয়ম দুর্নীতি করে কিভাবে এখানে চাকুরী করছে এমনটাই সাধারণ মানুষের প্রশ্ন। ইন্দু ভুষনের অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন, অনতিবিলম্বে তাকে এখান থেকে বিদায় ও ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ না দিলে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিবেন বলে জানান। ৩নং মুন্সিবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী প্রকৌশলী নাহিদ আহমেদ তরফদার জানান, আমার একটি গরুর ফার্ম রয়েছে সময়মত কোন চিকিৎসক পাইনা, এটা খুবই দুঃজনক। তাদেরকে ফোন দিলে বিভিন্ন মিটিং ইত্যাদি ইত্যাদি সমস্যা দেখানো হয়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডাক্তার ইন্দুভূষনের সাথে যোগাযোগ তাকে পাওয়া যায়নি।  এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: আব্দুস সামাদ জানান এ ব্যাপারে আমার কাছে কোন অভিযোগ আসেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা করা হবে।