বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
দেড় কোটি মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতন করেছে ইউএসএআইডি-র উজ্জীবন
দেড় কোটি মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতন করেছে ইউএসএআইডি-র উজ্জীবন

দেড় কোটি মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতন করেছে ইউএসএআইডি-র উজ্জীবন

প্রতিষিদ্ধ প্রতিবেদক
প্রকাশের সময় : August 24, 2022 | বাংলাদেশ

ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি)-এর সোশ্যাল অ্যান্ড বিহেভিয়ার চেঞ্জ কমিউনিকেশন (এসবিসিসি) প্রজেক্ট, উজ্জীবনের আয়োজনে লার্নিং ফেস্টিভাল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল ১০ টায় ঢাকার রেডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনে শুরু হওয়া ফেস্টিভালটি চলে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ডাঃ মোঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন জনসংখ্যা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি অফিস (ওপিএইচএন)-এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মিরান্ডা বেকম্যান সহ ইউএসএআইডি-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
ইউএসএআইডি-এর উজ্জীবন প্রকল্প বিগত পাঁচ বছরের বাস্তবায়ন থেকে তার শিখনগুলো প্রচার করেছে এবং বাংলাদেশের স্বাস্থ্যের ফলাফলগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আরও সফল এবং উদ্ভাবনী প্রকল্পগুলির বিকাশের ভিত্তি তৈরি করে চলছে। লার্নিং ফেস্টিভাল এর মাধ্যমে একাধিক মাধ্যম ব্যবহার করে সমন্বিত বার্তা ব্যবহার করে জনগণকে অভিন্ন তথ্য দেয়া; দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তনের জন্য স্বাস্থ্য আচরণের মূল প্রভাবক কারণগুলি যেমন নিজের কার্যকারিতার উপর বিশ্বাস, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারস্পারিক যোগাযোগ, জেন্ডার সমতা ও সামাজিক রীতিকে বিবেচনা করা; এবং আধুনিক গর্ভনিরোধক পদ্ধতি ব্যবহার এবং মাসিক স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনার তথ্য সহ নারী ও মেয়েদের কাছে পৌঁছানোর জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহার বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলে এসব সুপারিশ তুলে ধরেন উজ্জীবন প্রকল্প।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ডাঃ মোঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, “৪র্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য সামাজিক ও আচরণ পরিবর্তন যোগাযোগ কার্যক্রমের কোনো বিকল্প নেই। শুধুমাত্র সামাজিক এবং আচরণ পরিবর্তনের জন্য যোগাযোগের মাধ্যমে আমরা কমিউনিটির সম্পৃক্ততা বাড়িয়ে সামাজিক বৈষম্য দূর করতে পারি, রোগ প্রতিরোধে জীবনযাত্রার পরিবর্তনকে অনুপ্রাণিত এবং স্বাস্থ্যসেবা নিতে মানুষকে উৎসাহিত করতে এগিয়ে আসতে পার। এসব গুলোর ভিত্তি তৈরিতে ইউএসএআইডির উজ্জীবন প্রকল্প গত পাঁচ বছরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।”

 ইউএসএআইডি-এর ওপিএইচএন ভারপ্রাপ্ত পরিচালক, মিরান্ডা বেকম্যান, বাংলাদেশ সরকার এবং তার অংশীদারদের এমন একটি দেশ গড়ে তুলতে সহায়তা করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, “শুধুমাত্র সরকার ও বৈদেশিক সাহায্য দিয়ে উন্নয়ন নিশ্চিত করা যায় না। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আমাদের কাজে আমাদের সাথে যোগদান করার জন্য আমাদের অবশ্যই বেসরকারী খাত এবং অন্যান্য অপ্রচলিত দাতাদের জন্য জায়গা তৈরি করতে হবে। একই সাথে নারী ও পুরুষ এবং মেয়ে ও ছেলেরা নিজেদের এবং তাদের পরিবারের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবন বেছে নেওয়া ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে সকলের সম্মিলিত পদক্ষেপের উপরও জোর দেন তিনি।”
ইউএসএআইডি-এর উজ্জীবন প্রকল্প স্বাস্থ্যকর আচরণ এবং স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের আচরণ বৃদ্ধির জন্য কাজ করে আসছে। প্রকল্পটি চারটি বিষয়ের উপর কাজ করে-মা, নবজাতক, শিশু ও কিশোর-কিশোরীর স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, পুষ্টি এবং যক্ষ্মা। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, কৌশলগত অংশীদার ও বেসরকারি খাতের সহযোগিতায়, প্রকল্পটি চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগে তার অগ্রাধিকার জনগণের মধ্যে জন্য স্বাস্থ্য প্রমোশনের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে চলছে।

 অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউএসএআইডি কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের -এর ঊর্ধ্বতন ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা, প্রকল্প কর্মী, উন্নয়ন অংশীদার এবং প্রতিনিধিসহ ৩৫০ জনেরও বেশি অংশগ্রহণকারী।

 ইউএসএআইডি ও উজ্জীবন প্রকল্প সম্পর্কে:

মার্কিন সরকার, ইউএসএআইডি-এর মাধ্যমে, খাদ্য নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক সুযোগ সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নতি, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও অনুশীলনের প্রচার, পরিবেশ রক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য প্রতি বছর প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে।

ইউএসএআইডি-এর উজ্জীবান সোশ্যাল অ্যান্ড বিহেভিয়ার চেঞ্জ কমিউনিকেশন (এসবিসিসি) প্রকল্প, সেভ দ্য চিলড্রেন এবং বাংলাদেশ সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রামের সাথে অংশীদারিত্বে জনস হপকিন্স সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রামস দ্বারা বাস্তবায়িত হয়েছে, যার লক্ষ্য বাংলাদেশের নারী, পুরুষ এবং কিশোর-কিশোরীদের উদ্বুদ্ধ করা যেন স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার উন্নতির জন্য তারা ইতিবাচক আচরণ গ্রহণ করতে পারে। উজ্জীবন একটি সমন্বিত এসবিসিসি কৌশল বাস্তবায়ন করেছে যা একাধিক বিষয় এবং স্বাস্থ্য আচরণ নিয়ে কাজ করেছে এবং চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের তার অগ্রাধিকার জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছানোর জন্য মিডিয়া, আউটরিচ, কমিউনিটি মোবিলাইজেশন এবং দক্ষতা উন্নয়ন পদ্ধতির মিশ্রণ ব্যবহার করেছে।

টেকসই উন্নয়নের জন্য, উজ্জীবন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, বেসরকারী খাত এবং স্থানীয়/অলাভজনক সংস্থাগুলির সাথে পারস্পরিক সহযোগিতায় ভিত্তিতে কাজ করেছে এবং তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা হয়েছে যেন তারা উজ্জীবন-এর সরঞ্জাম, উপকরণ এবং পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করে কার্যকর স্বাস্থ্য প্রচার প্রোগ্রামগুলি ডিজাইন এবং বাস্তবায়ন করতে পারে।