শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
৩ ব্যাংকের অনিয়মের নেপথ্যে যত কথা
৩ ব্যাংকের অনিয়মের নেপথ্যে যত কথা

৩ ব্যাংকের অনিয়মের নেপথ্যে যত কথা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশের সময় : December 01, 2022 | ব্যাংক

ইতোমধ্যে ইসলামী শরীয়াহ মেনে পরিচালিত ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ঋণ প্রদান ও আর্থিক অনিয়মের সত্যতা যাচাই করতে তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।  এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ৮ ব্যাংকের মধ্যে এ ৩টি ব্যাংক অন্যতম। ব্যাংক গুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্রেও আঞ্চলিকায়নের অভিযোগ উঠছে গত ক’বছর ধরে। 

এদিকে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) ৩ দিনব্যাপী উন্নয়ন সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, আমদানি-রপ্তানির ব্যাপারে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অর্থ পাচার হয়। গত কয়েক মাসে বেশি দামের পণ্য কম দামে এলসি খুলে বাকি অর্থ হুন্ডিতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

ব্যাংকগুলোর বক্তব্যে বলা হয়েছে,  যথাযথ ব্যাংকিং নিয়ম মেনে তারা ঋণ দিয়েছে। এ নিয়ে ব্যাংকগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্লাটফ্রমে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেছে। তবে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের মালিকানা দখল নিয়ে বিভিন্ন বিতর্ক রয়েছে অনেক আগে থেকেই। আবার পণ্য আমদানি করতে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো তাদের উদার ইসলামী নীতিরও ব্যাখ্যা দিচ্ছে। 

আরো পড়ুন: দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যাংকের স্বীকৃতি পেল ইসলামী ব্যাংক

এদিকে, ভুয়া ঠিকানা ও কাগজপত্র ব্যবহার করে নামসর্বস্ব কোম্পানি খুলে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা তুলে নেয়া ও এস আলম গ্রুপের ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার ঘটনায় রিট করার জন্য হাইকোর্ট পরামর্শ দিয়েছেন।

তবে একটি ব্যাংকে যখন আর্থিক বিভিন্ন অনিয়ম খতিয়ে দেখা বা অনিয়ম যাতে না হয় সে বিষয়ে পরামর্শ দেয়ার জন্য স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়। তাই আর্থিক অনিয়মের সময় স্বতন্ত্র পরিচালকরা কেমন ভূমিকা রেখেছেন এ নিয়েও ব্যাংকগুলোর গ্রাহকরা প্রশ্ন তুলেছেন। আবার একটি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব অনিয়মের ব্যাপারে অবগত থাকার পরও চুপ ছিলো। 

অন্যদিকে আরেকটি দৈনিকে কিছুদিন আগে প্রকাশিত ‘ইসলামী ব্যাংকে ভয়ংকর নভেম্বর’ শীর্ষক সংবাদের বিষয়ে ব্যাংকটি জানিয়েছে, নাবিল গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান শিমুল এন্টারপ্রাইজসহ আটটি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া ইসলামী ব্যাংকের ঋণের বিষয়ে যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, তা যথাযথভাবে উপস্থাপিত হয়নি।

আবার ইসলামী ব্যাংক থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা লেনদেনে অর্থ পাচার হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে দুদক ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) তদন্ত চেয়ে চিঠি দিয়েছেন ৫ জন আইনজীবী। এ বিষয়ে দুদক কী পদক্ষেপ নিলো জানতে চাইলে সচিব বলেন, চিঠি আমার হাতে এখনো পৌঁছায়নি। তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হলে কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু হবে। 

সম্প্রতি ঋণ দেয়ায় ব্যাংকগুলোর অনিয়ম নিয়ে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নানা উপায়ে ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকার ঋণ বের করে নিয়েছে।

এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক থেকে ৭ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা ও বাকি অর্থ সোশ্যাল ইসলামী ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে বের করে নেয়া হয়। আর যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে এসব ঋণ বের করা হয় তার মধ্যে বেশ কয়েকটিই ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে ঋণ নিয়েছে। যেগুলো মূলত নামসর্বস্ব কোম্পানি। এ রকম নামসর্বস্ব দুই কোম্পানির নামে ইসলামী ব্যাংক থেকে সরানো হয় ২ হাজার কোটি টাকা।


প্রতিষিদ্ধ/এমএ/ওএমএম