বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৪
ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে ট্যুরিং ক্লাবের ধারণা
কোন ব্যাক্তি বা প্রাইভেট কোম্পানিকে দিয়েও এটিকে সাজিয়ে তুলে বিদেশি পর্যটকদের জন্য উপযুক্ত করে দেশের ও এই এলাকার মানুষের ইনকাম বৃদ্ধি করা যায়

ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে ট্যুরিং ক্লাবের ধারণা

দিদারুল আলম মজুমদার
প্রকাশের সময় : November 06, 2021 | প্রকৃতি

দেশের টাকা দেশে রাখতে দেশের ভিতরের নৈশর্গিক স্পটগুলো হাইলাইটস করতে দেশপ্রেমিকদের নিয়ে একটি ট্যুরিং ক্লাব করা হবে

বাংলাদেশের গ্রেন্টিং হাইল্যান্ড খ্যাত মেঘের রাজ্য সাজেক। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন খাগড়াছড়িতে অনেক যাতায়াত হলেও সাজেক এর আলোচনা এত বেশি ছিলোনা। তাই তখন যাওয়াও হয়নি। ইদানিং সময়ে এই সাজেকের আলোচনা পর্যটকদের মূখে মূখে।

ছোট ভাই সাজিদের প্রস্তাবে যেতে রাজি হয়ে গেলাম। গ্রুপ লিডার মোয়াজ্জম ভাই সফরের পরিকল্পনা সুন্দর ভাবে সাজিয়ে নিয়েছিলেন বিধায় সফরটি বেশ সুন্দর হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। ঢাকা থেকে লন্ডন এক্সপ্রেস ম্যান এ করে ১৭অক্টোবর ২০২১ রাত ১১.৪৫ টায় রওয়ানা হয়ে সকাল ৭ টায় খাগড়াছড়িতে পৌঁছে যাই। সেখানকার শাপলা চত্বরে ফেনী হোটেল দেখে নাস্তা সেখানেই সেরে নিলাম।

ইতিমধ্যে আমাদের দলনেতা চাঁদের গাড়ী ঠিক করে নিলেন। উঠে গেলাম সেই গাড়ীতে। ৭০ কিমি পাহাড়ী রাস্তা পাড়ি দিয়ে দুপুর ১ টায় পৌঁছে গেলাম সাজেকের রুইলুই পাহাড়ে।

উপস্থিত খোঁজ নিয়ে রিজনেবল রেইটে দার্জিলিং নামে একটি রিসোর্ট পেয়ে গেলাম। সেখানে ব্যাগগুলো রেখে ফ্রেস হয়ে দুপুরে পাশের হোটেলে লাঞ্চ সেরে নিলাম। এরপর একটু রেস্ট করে বের হলাম। হ্যালিপ্যাড ও আশপাশের জায়গাগুলো পরিদর্শন এবং ছবি তোলার কর্মসূচিতে সবাই ব্যস্ত হয়ে গেলো। আর্মিদের একটি স্পটে ঢুকে মনে করেছি মেঘমালার কাছে যেতে পারবো। মেঘমালার কাছে যেতে না পারলেও দেখি একটু পরে মেঘ আমাদের গা ঘেঁষে চলতে চলতে বৃষ্টিতে পরিনত হলো‌।

আমি মেঘ ধরার জন্য অনেক খরচ করে মালয়শিয়ার গ্রেন্টিং হাইল্যান্ড গিয়েছি। নিজের দেশের ভিতরে এত কাছে সাজেক পাহাড় রুইলুই এবং কংলাক গিয়েছি অনেক দেরিতে। এটি আমাদের ও আমাদের নেতৃত্বের দূরদর্শিতার অভাবের কারণ বলে মনে করি। যাক দিনের ঘুরাঘুরি সেরে রাতে ব্যাম্বো চিকেন খাবার ছিলো আনকমন এবং অসাধারণ।

পরদিন ভোরে কংলাক পাহাড়ের সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠার প্রতিযোগিতা ভালোই লেগেছে। ওখানকার ফরমালিন মুক্ত ফলমূল খেতে খুব মজাদার। অন্য আইটেমগুলো কিনতে গেলে চড়ামূল্যে কিনতে হয়। কারণ এত নিচে থেকে মালামাল কিনে উপরে পৌঁছাতে গেলে তাদের অনেক খরচ যোগ হয়ে যায়।

এখানে আদিবাসীরা ছাড়া আর কেউ জমি কিনতে পারেনা বলে এর উন্নয়ন দেরীতে হওয়াটা স্বাভাবিক। আদিবাসীরা এককভাবে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান, এই তিন পার্বত্য জেলাকে সাজিয়ে তোলা অসম্ভব। আবার সরকারী উদ্যোগে সেখানে ক্যাবল কার সহ নানাবিধ আইটেম যুক্ত করে আকর্ষণীয় করে তোলা যায়।

কোন ব্যাক্তি বা প্রাইভেট কোম্পানিকে দিয়েও এটিকে সাজিয়ে তুলে বিদেশি পর্যটকদের জন্য উপযুক্ত করে দেশের ও এই এলাকার মানুষের ইনকাম বৃদ্ধি করা যায়।

কংলাক পাহাড় ঘুরে এসে আবার খাগড়াছড়িতে ফেরার প্রস্তুতি নিয়ে সকাল ৯.৩০ এ নির্ধারিত চাঁদের গাড়ীতে উঠে যাই। তারা চুক্তির আলোকে দুপুরে খাগড়াছড়িতে এসে আলুটিলা,ঝর্না ও ঝুলন্ত ব্রীজ পরিদর্শন করে আমাদেরকে বিদায় জানান।

আমরা আবার ঢাকায় এসে যাওয়ার জন্য হানিফের ভলবো গাড়ীর টিকেট নিয়ে নিই। রাত ১০ টা পর্যন্ত কিছু কেনাকাটা ও খাবার সেরে নিই। সুযোগ পেয়ে খাগড়াছড়ির ইসলাম পুর দারুল আইতাম এ গিয়ে মোমিন ভাই,দুই ইউসুফ ভাই ও ছোট ভাই ফয়সলের আতিথেয়তাও মিস করিনি।

হানিফের কাউন্টারে আসার প্রাক্কালে ওবায়েদ ভাই ও এরশাদ ভাইকে পেয়ে আবারও প্রতীয়মান হলো পৃথিবী আসলেই গোলাকার। ঢাকায় আসতে আসতে প্রস্তাব উঠলো দেশের টাকা দেশে রাখতে দেশের ভিতরের নৈশর্গিক স্পটগুলো হাইলাইটস করতে দেশপ্রেমিকদের নিয়ে একটি ট্যুরিং ক্লাব করা হবে। এই ক্লাবের নাম ও প্রকৃতি নিয়ে পরামর্শ আশা করছি।


পূর্বের সংবাদ
পরের সংবাদ