ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত হত্যা নতুন কোন বিষয় নয়। সম্প্রতি এ সীমান্ত হত্যা দিন দিন প্রকট আকার ধারণ করছে। কোনভাবেই যেন এ হত্যা বন্ধ করা যাচ্ছে না। এ নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ভারতের সাথে বাংলাদেশের প্রায় চার হাজার কিলোমিটারেরও বেশি সীমান্ত রয়েছে। যা বিশ্বের পঞ্চম দীর্ঘ সীমান্ত। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে হত্যাকান্ডে শূন্যে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও তার বাস্তবায়ন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
বন্ধুভাবাপন্ন দেশের সীমান্তে এমন প্রাণহানি অকল্পনীয়। দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফ এর মধ্যে নিয়মিত বৈঠক হয়। সীমান্ত হত্যা বন্ধ হওয়া দরকার এ বিষয়ে বাংলাদেশ ভারতের সাথে বহুবার আলোচনা করেছে। প্রতি বছর সীমান্ত সম্মেলনে হত্যার বিষয়টি আলোচিত হলেও কার্যকরী কোন ভূমিকা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর তথ্য মতে,২০১৫ থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত সীমান্ত ২০২ জন বাংলাদেশী নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে। আহত হয়েছে ৪ শতাধিক বাংলাদেশি নাগরিক।
অন্যদিকে মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যায়, গত ২০ বছরে প্রতিবছর গড়ে ৬২ জন বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে বিএসএফ। বাংলাদেশের প্রতি বিএসএফের বিরূপ আচরণ ও নির্যাতনের কারণে এই সীমান্তকে বিশ্বের সবচেয়ে বিপদজনক সীমান্ত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা।
সীমান্তে চোরাচালান,গরুপাচার, মানব পাচার সহ মাদকের অনুপ্রবেশের মত সব সমস্যার সমাধান আলোচনার মাধ্যমেই সম্ভব। সীমান্ত হত্যা রোধে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফের হাতে প্রাণঘাতি অস্ত্র দেয়া হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও সেসব প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন এখনো সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
সীমান্তে প্রানঘাতী অস্ত্র লিথাল উইপন ব্যবহার নিষিদ্ধ হোক কেননা গুলি করে মানুষ হত্যা করা গেলেও মূল সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। এহেন পরিস্থিতিতে সীমান্ত সুরক্ষায় বিজিবিকে আরো সক্ষম ও কার্যকরী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি ভারতকে বাংলাদেশি নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে দুই দেশের মধ্যে বোঝাপড়া করতে সরকারের কার্যকরী ভুমিকা প্রয়োজন।
মাহমুদুল হক হাসান
প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক
বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম,
ঢাকা কলেজ শাখা।