সোমবার, মে ১৩, ২০২৪
সম্মিলিত উদ্যোগেই বাল্যবিবাহ রোধ সম্ভব
সম্মিলিত উদ্যোগেই বাল্যবিবাহ রোধ সম্ভব: ঘাসফুলের ওয়েবিনারে বক্তারা

সম্মিলিত উদ্যোগেই বাল্যবিবাহ রোধ সম্ভব

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
প্রকাশের সময় : June 03, 2023 | গণমানুষের কথা

সভাপতির বক্তব্যে ড. মনজুর উল আমিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ এশিয়ার শীর্ষে, ১৮ বছর বয়সের আগে ৫১শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়। অথচ মালদ্বীপে-২ শতাংশ, শ্রীলংকায়-১০শতাংশ, পাকিস্থানে-১৮ শতাংশ ভারতে-২৩ শতাংশ, ভূটানে- ২৬ শতাংশ, আফগানিস্থানে-  ২৮ শতাংশ  এবং নেপালে -৩৩ শতাংশ বাল্যবিবাহ হয়। তিনি  বলেন, ইউনিসেফ’র সাম্প্রতিক তথ্যে জানা যায় বর্তমান ধারায় এ অঞ্চলে বাল্যবিবাহের পুরোপুরি অবসান হতে প্রায় ৫৫ বছর লাগতে পারে। কোভিড পরবর্তী চট্টগ্রাম শহরের সড়ক পরিবহণে যুক্ত শিশুদের উপর তার সাম্প্রতিক গবেষণার বরাতে তিনি  জানান, ৩৩৮ জন উত্তরদাতার মধ্যে ১৭.১৬শতাংশ ছেলেশিশুও বাল্যবিবাহ করেছে যা উদ্বেগের। মেয়েশিশুদের পাশাপাশি ছেলেশিশুদের মাঝেও বাল্যবিবাহের ঝোঁক বাড়ছে যা উদ্বেগজনক। আমাদের সচেষ্ট হতে হবে ২০৩০সালের মধ্যে এসডিজি’র লক্ষ্য অর্জনে।

দেশে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে বাংলাদেশে অঞ্চলভিত্তিক আর্থসামাজিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে যুগোপযুগী পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন, রাষ্ট্র, পরিবার, সমাজ সবাইকে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে হবে । মোবাইলের সহজলভ্যতার কারণে শিক্ষার্থীরা যাতে বিপথগামী না হয় সেই ক্ষেত্রে শিক্ষক ও অভিভাবকদের সচেতনতা প্রয়োজন। মেয়েরা শিক্ষা, চাকরিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেন বৈষম্যের শিকার না হয় তার উপর গুরুত্বারোপ করা দরকার। 

বাল্যবিয়ে ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে সামাজিক আচরণ ও পরিবর্তনের জন্য সচেতনতা বাড়াতে হবে।  বাল্যবিবাহের সামগ্রিক হার কমানোর জন্য মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেদেরও কম বয়সে বিয়ে রোধ করার জন্য যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার। বাল্যবিবাহ বন্ধে আইনের সঠিক চর্চা, প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি সরকারের নারীবান্ধব উদ্যোগগুলোর প্রচারে জোর দেয়া দরকার। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সরকার , এনজিও, সিভিল সোসাইটি সংগঠন, পাবলিক এবং প্রাইভেট সেক্টর সমূহের মধ্যে সমন্বিতভাবে কাজ করার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। ৩ জুন  শনিবার ঘাসফুল আয়োজিত ‘ বাল্যবিবাহ: লিঙ্গ সমতার অন্তরায়’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। 

ঘাসফুল চেয়ারম্যান ও সমাজবিজ্ঞানী ড. মনজুর-উল-আমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিকেএসএফ'র চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, স্বাগত বক্তব্য রাখেন  ঘাসফুল’র সহকারী পরিচালক সাদিয়া রহমান। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সানজীদা আখতার।  প্যানেল আলোচক  হিসেবে বক্তব্য রাখেন -খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারপার্সন প্রফেসর ড. মাহফুজা খানম, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন,  সাবেক সংসদ সদস্য  ও জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান চেমন আরা তৈয়ব, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ  আলা উদ্দিন ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল ফ্যাকাল্টির ডীন প্রফেসর ডা. সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। 

উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন -মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ পরিচালক মাধবী বড়ুয়া, সরকারী হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মুহাম্মদ কামরুল ইসলাম, পটিয়া লাখেরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জীব কুসুম চৌধুরী , রাংগুনিয়া উপজেলার পশ্চিম শিলক বেদৌরা আলম চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুবিনা ইয়াসমিন, ডাঃ খাস্তগীর সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ফাহমী নাহিদা নাজনীন, ইপসার ফারহানা ইদ্রিস, ব্র্যাইট বাংলাদেশ ফোরামের নির্বাহী পরিচালক উৎপল বডুয়া, সংশপ্তকের নির্বাহী পরিচালক লিটন চৌধুরী, স্বপ্নীল ব্র্যাইট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো: আলী শিকদার, অপরাজেয় বাংলাদেশের মাহবুব উল আলম ও মায়মুনা আক্তার মিম (ভুক্তভোগী বাল্যবিবাহ) । ওয়েবিনারে ৮টি সুপারিশমালা গৃহীত হয়।

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন-সৌদিআরব থেকে (হজ্জপালনরত) ঘাসফুলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আফতাবুর রহমান জাফরী, ঘাসফুল সাধারণ পরিষদের সদস্য শাহানা মুহিত , ঝুমা রহমান , জেলা তথ্য অফিস  চট্টগ্রামের উপ পরিচালক সাঈদ হাসান, যুগান্তর সমাজ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ইয়াছমিন পারভীন, ব্র্যাকের জেলা সমন্বয়ক এনামুল হাসান, আইডিএফ’র সুদর্শন বডুয়া, মনিষার নির্বাহী পরিচালক আজমল হোসাইন হিরু, উপকুল সমাজ উন্নয়ন সংস্থার জোবায়ের ফারুক লিটন , প্রত্যাশির সুফি বশির আহমদ মনি, উষার পিযুষ দাশ গুপ্ত, ঘাসফুল পরাণ রহমান স্কুলের অধ্যক্ষ মাহমুদা আক্তারসহ সংবাদিক, উন্নয়নকর্মীসহ সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ।