শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
চতুর্থ শিল্পবিপ্লব মোকাবেলায় দক্ষ জনবল তৈরি নতুন শিক্ষাক্রমের রূপকল্প ও বাস্তবায়নের চালেঞ্জ
চতুর্থ শিল্পবিপ্লব মোকাবেলায় দক্ষ জনবল তৈরি নতুন শিক্ষাক্রমের রূপকল্প ও বাস্তবায়নের চালেঞ্জ

চতুর্থ শিল্পবিপ্লব মোকাবেলায় দক্ষ জনবল তৈরি নতুন শিক্ষাক্রমের রূপকল্প ও বাস্তবায়নের চালেঞ্জ

প্রতিষিদ্ধ ডেস্ক
প্রকাশের সময় : March 09, 2024 | গণমানুষের কথা

সম্প্রতি প্রনয়নকৃত নতুন শিক্ষাক্রমে অভিজ্ঞতার মাধ্যমে যোগ্যতাভিত্তিক শিক্ষা বাস্তবায়নে শিক্ষাক্রম ও শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন জরুরি যাতে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী দক্ষ জনবল তৈরি করা যায়। এটি বৈশ্বিক কালান্তর। নতুন শিক্ষাক্রমের রূপকল্প বাস্তবায়নে আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো পরিপূর্ণ প্রস্তুত নয়।এটা উচ্চাভিলাসী পরিবর্তন, বাস্তবায়ন সক্ষমতাও প্রশ্নাতীত নয়। পাঠক্রমে আমাদের সামাজিক নৈতিকতা ও মূল্যবোধের বিষয়টা গুরুত্ব দিতে হবে। মূল্যায়নসহ নানা সীমাবদ্ধতা দূর করতে হবে। 

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শহর ও গ্রামের সরকারি কিংবা প্রাইভেট স্কুল-মাদরাসাগুলোতে বৈষম্য দূরীকরণ, গবেষণাগার, খেলার মাঠ, ডিজিটাল লাইব্রেরী স্থাপন, অডিও-ভিডিও টুলসসহ নানা প্রয়োজনীয় উপকরণ নিশ্চিত করে বাস্তবায়ন সক্ষমতা ও যোগ্যতা অর্জন করাসহ পর্যাপ্ত দক্ষ শিক্ষক, প্রশিক্ষক তৈরি করতে হবে। পাঠ্যবইয়ের বিষয়গুলোতেও আরো সংস্কার আনতে হবে। পাঠ্যবইতে প্রতিবন্ধী উপযোগী ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায় শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন রেফারেন্স বই’র যোগান দিতে হবে, গাইডবই, কোচিং বন্ধে কঠোর নজরদারি বাড়াতে হবে। 

উল্লেখ্য দেশে বর্তমানে ৩২ হাজার কোটি টাকার কোচিং বাণিজ্যের বাজার। নতুন শিক্ষানীতির পরিকল্পনা, নানা তথ্য-উপাত্ত, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে প্রচার প্রচারনা বাড়াতে হবে। মূল প্রবন্ধে জনাব আবুল মোমেন বলেন, নতুন এই পদ্ধতি ‘ অভিজ্ঞতার মাধ্যমে যোগ্যতাভিত্তিক শিক্ষা (Competency based experimental learning) অর্জনে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন, এনজিও এবং নাগরিকসমাজকে নিয়ে মত বিনিময় ও মত প্রকাশের বিভিন্ন সেশন হওয়া দরকার। আলোচনা-সমালোচনার সুযোগ উন্মুক্ত থাকলেই ক্রমে নির্বিচার নিন্দা বা স্তূতির পরিবর্তে গঠনমূলক পরামর্শ দেওয়ার অভ্যাস গড়ে উঠবে। সেটি জরুরি। টেলিভিশনসহ সব রকম গণমাধ্যমে নতুন শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে সহজ ভাষায় বিস্তারিত প্রচার চালাতে হবে।

সভাপতির ভাষণে ড. মনজুর-উল-আমিন চৌধুরী বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৪- মানসম্পন্ন শিক্ষা এবং সবার জন্য শিক্ষা রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকার পূরণে আরো যতœশীল হতে হবে। মেগা প্রকল্প নেই শিক্ষায়। বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্ধ জিডিপির মাত্র ১.৭৬ শতাংশ অথচ ইউনেস্কো এবং বিশ্ব শিক্ষা ফোরামের সুপারিশ হচ্ছে শিক্ষাখাতে বাজেটের ৪-৬ শতাংশ বরাদ্ধ রাখা। লক্ষণীয় সংশোধিত এডিপিতে প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি কম থাকায় শিক্ষাখাতে ১২হাজার ৫শত কোটি টাকা ও স্বাস্থ্যখাতে ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্ধ কমেছে। উল্লেখ্য স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্ধ জিডিপির ১ শতাংশেরও কম। এখানে বাস্তবায়নের সক্ষমতার প্রশ্নটিও এসে যায়। শিক্ষাখাতে পরিবারের অর্থ যোগানে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে বাংলাদেশ; বাংলাদেশ ৭১শতাংশ, নেপাল ৫০শতাংশ এবং পাকিস্তান ৫৭শতাংশ।  ওয়েবিনারে ১০টি সুপারিশমালা গৃহীত হয়।

বর্তমান সময়ের বহুল আলোচিত ও জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নতুন শিক্ষাক্রমের রূপকল্প ও বাস্তবায়নের চালেঞ্জ শীর্ষক ঘাসফুল আয়োজিত আজ ০৯ মার্চ শনিবার বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত ওয়েবিনারে বক্তারা এ অভিমতগুলো প্রকাশ করেন। ঘাসফুল-চেয়ারম্যান ও চবি সিনেট সদস্য ড. মনজুর-উল-আমিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় ও সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঘাসফুল এর সিইও আফতাবুর রহমান জাফরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন, প্যানেল আলোচক ছিলেন ইমেরিটাস প্রফেসর ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য জনাব ড. এম. এ, সাত্তার মন্ডল, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিশু বিকাশ নেটওয়ার্ক (বিইএন) এর সভাপতি ও  ইমেরিটাস প্রফেসর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ড. মনজুর আহমদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাক্তন উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট এর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। 

 এছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তা, স্বনামধন্য শিক্ষক, শিক্ষা গবেষক, প্রশিক্ষক, উন্নয়নকর্মীসহ বিভিন্নস্তরের ব্যক্তিত্ব সংযুক্ত ছিলেন। বাংলাদেশের নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনাটি প্রচারের লক্ষ্যে পুরো অনুষ্ঠানটি ঘাসফুল ফেইসবুক পেইজে সরাসরি লাইভ প্রচার করা হয়।

আরো দেখুন: 

ক্ষুদ্র অর্থায়ন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার

 

প্রতিষিদ্ধ/এসএম