মঙ্গলবার, মে ৭, ২০২৪
গুলশানের রাস্তার ফলজ ও বনজ গাছ লাগানো হবে 
আবদুল্লাহ আল জহির (স্বপন)

গুলশানের রাস্তার ফলজ ও বনজ গাছ লাগানো হবে 

প্রকাশের সময় : February 13, 2022 | গণমানুষের কথা

আবদুল্লাহ আল জহির (স্বপন) একজন শিল্পপতি, সামাজিক, ক্রীড়া ও সাংগঠনিক ব্যক্তিত্ব।

তিনি আসন্ন গুলশান সোসাইটি নির্বাচন ২০২২-২০২৪ এ সভাপতি পদে নির্বাচন করছেন। এছাড়াও তিনি দেশের জনপ্রিয় শরীয়াহ ভিত্তিক ইসলামী ব্যাংক এক্সিম ব্যাংকের পরিচালক। গুলশান সোসাইটি প্রতিষ্ঠা হয় ২০০২ সালে। স্বপন প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে গুলশান সোসাইটির  কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত। তিনি গুলশানবাসীর সাথে তাদের সুখে দুঃখে সবসময় নিবেদিত প্রাণ হিসেবে কাজ করেছেন। আসন্ন গুলশান সোসাইটি নির্বাচনে গৌরবের গুলশান প্যানেল থেকে লিডার হিসেবে নির্বাচন করছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানের কি ধরণের পরিবর্তন আনবেন এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বপন বলেন, দেখুন গুলশান এলাকা রাজধানীর অভিজাত এলাকা এখানে সমাজের অবস্থা সম্পন্ন শিক্ষত লোকেরা বসবাস করেন। আমরা এখানে বিদ্যমান যেসব নাগরিক সুযোগ-সুবিধা আছে আমি নির্বাচিত হলে এলাকার সকলকে নিয়ে সেবার মান আরো বৃদ্ধি করবো। 

ঢাকার অন্যতম প্রসিদ্ধ আবাসিক কমিউনিটি গুলশান সোসাইটি। গুলশান এলাকার অধিবাসীদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত একটি সমাজ সেবামূলক প্রতিষ্ঠান এটি। গুলশানের অধিবাসীদের বিভিন্ন নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরনে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে গুলশান সোসাইটি। রাজউক, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, ডেসকো এবং ওয়াসার মত সংস্থাগুলোর সাথে সমন্বয় ও পার্টনারশিপের মাধ্যমে নাগরিক সমস্যা সমাধানে সক্রিয় গুলশান সোসাইটি। এরই ধারাবাহিকতায় গুলশান লেকপার্ক ও গুলশান-বনানী লেক ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে নতুন সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়েছে।
এছাড়াও রাজউকের মালিকানাধীন গুলশান লেক পার্ক ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করছে সোসাইটি। রাজউক ও গুলশান সোসাইটির এই যৌথ কার্যক্রম পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের একটি প্রশংসনীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে ইতিমধ্যেই স্বীকৃতি লাভ করেছে।
রাজধানীর ঢাকার অন্যতম প্রসিদ্ধ আবাসিক কমিউনিটি গুলশান সোসাইটির সাথে এর আগে লেক ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের সমঝোতা স্মারক ২০১৮ সালে প্রথম স্বাক্ষরিত হয়। লেক পার্ক ব্যবস্থাপনার সমঝোতা গত ২০০৫ সাল থেকে চলমান রয়েছে। এই চুক্তির আওতায় বনানী-গুলশান-বারিধারা লেকের সৌন্দর্যবর্ধন ও রক্ষণাবেক্ষণে কাজ করে আসছে গুলশান সোসাইটি। লেকের পাড়ে গাছ লাগানো, দখলমুক্ত রাখা, লেকের পানি পরিষ্কার রাখা এবং ময়লা-আবর্জনামুক্ত রাখতে কাজ করছে গুলশান সোসাইটি। সৌন্দর্যবর্ধন কাজ করছে সোসাইটি। বিভিন্ন সময় লেকের গুলশান অংশে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হয়েছে। লেকে বর্জ্য না ফেলতে এলাকাবাসীকে সচেতন করেছে।
 

বর্তমানে এখানে কোন কোন ধরণের সমস্যা আপনি চিহ্নিত করছেন এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বপন বলেন এখানে বেশ কিছু সমস্যা  আছে তার মধ্যে অন্যতম হল মশার উপদ্রব। আমাদের গুলশানের লেকগুলোকে দূষণমুক্ত করা এখানে ড্রেনের পাড় ধরে সমস্ত সুয়েরেজ লাইনগুলো আছে সেসব লেকের পানিতে সরাসরি লেকের পানিতে ময়লা বর্জ ফেলে এতে করে লেকের পানি দূষিত হয়। আমরা চাই আমাদের লেকের পানি যাতে এত স্বচ্ছ হয় যেন এ পানিতে নেমে গোসল করা যায়। 
ফুটপাতের ধারে কিছু প্রাচীন গাছ আছে তার মধ্যে মরা গাছগুলো পথচারীদের চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি করে, সেগুলোকে কেটে এখানে নতুন নতুন ফলজ ও বনজ গাছ লাগানো ও এগুলো নিয়ে সিটি করপোরেশনের সাথে কাজ করব। 
স্বপন বলেন আমি বহু দেশে ঘুরেছি। আমরা দেখেছি নির্মাণ সামগ্রী ইট, বালু সিমেন্ট ইত্যাদি ট্রাকে ঢেকে নিয়ে আসে, কিন্তু আমাদের দেশে এসব সামগ্রীর কারণে রাস্তাঘাটে যানজটসহ বায়ু দূষণের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। 
 
স্বপন বলেন, গুলশান লেকপার্ক ও গুলশান-বনানী লেকের পাড়ে গাছ লাগানো, দখলমুক্ত, লেকের পানি পরিষ্কার রাখা এবং ময়লা- আবর্জনামুক্ত, সৌন্দর্যবর্ধন ও পরিচ্ছন্নতা রাখা। ইতোমধ্যে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও গুলশান সোসাইটির মধ্যে পৃথক দুটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়েছে।


রাজধানীর অভিজাত এলাকা হওয়া সত্ত্বে গুলশান-বনানী-বারিধারার বহুতল ভবনেও নেই অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) নজরদারির দায়িত্ব থাকলেও বছরের পর বছর ধরে চলছে এমন অব্যবস্থাপনা। অথচ অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থার শর্তেই রাজউক ওইসব বহুতল ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেয়। আমি নির্বাচিত হলে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থার উন্নয়নসহ ভবন নির্মাণাধীন ভবনের কারণে যাতে পথচারী ও বায়ু দূষণের মতো ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে কাজ করবো। 
গুলশান নতুন বাজার থেকে নর্দার দিকে যাওয়ার মূল সড়কের বাম পাশে ফুটপাত। অনায়াসেই হেঁটে যেতে পারেন তিন থেকে চারজন পথচারী। কূটনৈতিকপাড়া বারিধারার সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে এই ফুটপাত দিয়ে হেঁটে একটু সামনে গেলেই থমকে দাঁড়াতে হবে। কেননা এখানে রয়েছে ময়লা রাখার ঘর (এসটিএস) এরপরই ফুটপাতের উপর রয়েছে সেমিপাকা ঘর।
শহরের ফুটপাত দখলমুক্ত করে প্রতিনিয়ত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাওয়া সংস্থা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজে এই ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।' কোনো পথচারী এই ফুটপাত দিয়ে হেঁটে গেলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজে নিয়োজিত এ ঘরের সামনে এসে বাধাগ্রস্ত হতে হবেন। এরপর যে মূল সড়ক দিয়ে হেঁটে যাবে তারও জো নেই। কারণ এরপর ফুটপাতের ওপরে রয়েছে ছোট ছোট আরও দুই-তিনটি ঘর। এগুলো ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার গাড়ি মেরামতের কাজে ব্যবহার করা হয়। এই ঘরগুলোর সামনের ফুটপাতসহ সড়কের কিছু অংশে গাড়ি মেরামতের কাজ চলে।
এতে ফুটপাতের পাশে মূল সড়কের অনেকটা জায়গা জুড়ে সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বড় বড় ট্রাক রাখা থাকে। তাই এই রাস্তাটুকু পার হতে গেলে যেকোনো পথচারীকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মূল সড়কের মাঝামাঝি জায়গা দিয়ে হেঁটে যেতে হবে। অথচ ব্যস্ত এ সড়কে সারাদিন বাস-ট্রাকসহ দ্রুত গতির যানবাহন চলাচল করছে।
এই সড়কে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে গিয়ে কেউ হয়তো ভাবতে পারেন সামনেই হয়তো ফুটপাতে উঠা যাবে। কিন্তু এরপর ফুটপাতে রাখা আছে ময়লা আনা নেওয়া ভ্যান ও ট্রলি। ওই ঘর থেকে শুরু করে প্রায় অর্ধকিলোমিটার জুড়ে সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার এই কার্যক্রম দেখে বেশিরভাগ মানুষই ফুটপাত ছেড়ে পাশের রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন।
 
সম্প্রতি দেখা গেছে, এসব ভ্যান ও ট্রলি ফুটপাতের পাশে তালা দিয়ে রাখা হয়েছে। আর ছোট ছোট ঘরগুলোর সামনে বড় ট্রাকসহ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজে ব্যবহৃত গাড়ি মেরামত করা হচ্ছে। আর পথচারীরা হেঁটে যাচ্ছেন মূল সড়ক দিয়ে। সড়কের এই অংশে আবার ড্রেনের ময়লা পড়ে থাকতে দেখা গেছে। আমি নির্বাচিত হলে গুলশানের ময়লা ব্যবস্থাপনার দিকেও বিশেষভাবে নজর দিবো। 
গুলশানের মূল সড়ক ছাড়া বাকি সব শাখা সড়কের কোথাও নেই সিসি টিভি ক্যামেরা। তবে কিছু অলিগলিতে অবস্থিত ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে সিসি ক্যামেরা থাকলেও সেসব ক্যামেরার মুখগুলো রয়েছে ভবনের দিকে, তাই সড়কগুলো থাকছে নজরদারির বাইরে। যার কারণে প্রয়সই গুলশানে হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনাও ঘটে থাকে। 
স্বপন বলেন আমি নির্বাচিত হলে পরিকল্পনায় থাকা বাকি ৫শ' ক্যামেরা লাগানো হলে তখন অলিগলিগুলোও নজরদারির আওতায় আসবে। তবে বর্তমানে শুধু মূল সড়কে থাকা একশ ক্যামেরার মনিটরিং ঠিকমতো হচ্ছে কি না সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হবে।


 
এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গুলশান, বারিধারা ও নিকেতন সোসাইটি মিলে পুরো এলাকাকে সিটি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। গড়ে তোলা হয় 'ল অ্যান্ড অর্ডার কো-অর্ডিনেশন কমিটি'। কূটনৈতিক পাড়া হিসেবে পরিচিত এই এলাকার শাখা সড়কগুলো, সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে কোনো সড়কেই সিসি ক্যামেরা নেই। যা আছে তা ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের হওয়ায়, সেসব ক্যামেরার চোখ ভবনের দিকে। 
গুলশান এবং বনানী এলাকার পরিকল্পনা করা হয় অনেক আগে। সে সময় ঢাকা শহরের এক প্রকার প্রান্ত ছিল এই এলাকা। কিন্তু সময় যতই গড়িয়েছে, এই ঢাকা ততই সম্প্রসারিত হয়েছে চারিদিকে। এবং গুলশান বনানী এলাকা পড়েছে সেই সম্প্রসারিত এলাকার ঠিক মাঝ বরাবর। ঢাকার উত্তরে বসুন্ধরা বা উত্তরা, দক্ষিণে মতিঝিল বা পুরান ঢাকা, পশ্চিমে ধানমন্ডি বা মোহাম্মদপুর আর পূর্বে বনশ্রী, আফতাবনগর যে অঞ্চলই ধরা যাক না কেন, সব এলাকার মোটামুটি মাঝখানে পড়েছে গুলশান এবং বনানী। আর এমন একটি অবস্থান অবশ্যই একটি সফল বাণিজ্যিক এলাকা গড়ে উঠার পেছনে বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে। 


কোন একটি সফল বাণিজ্যিক এলাকা থাকে মানুষের পদচারনায় মুখরিত। সেখানে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে অসংখ্য মানুষ। আর তাই একটি কমার্শিয়াল হাবে চাই উপযুক্ত যোগাযোগের ব্যবস্থা। গুলশান এলাকাটি এই দিক থেকেও চমৎকার। অভ্যন্তরীণভাবে কানেক্টেড রাস্তা তো আছেই, গুলশানে যোগাযোগের সবচেয়ে বড় উপায় হল মাঝ বরাবর চলে যাওয়া গুলশান এভিনিউ। গুলশান ১ নম্বর সার্কেলের সাথে একপাশে মহাখালী অন্যপাশে বাড্ডা লিংক রোডের যোগাযোগ  রয়েছে। দক্ষিণ দিকে চলে গেলে পৌঁছানো যায় নিকেতন, হাতিরঝিল কিংবা তেজগাঁওতে। আর ২ নম্বর সার্কেলের সাথে সরাসরি যোগাযোগ বনানী, বারিধারা প্রমুখ এলাকার। অর্থাৎ ঢাকা শহরের প্রধান কয়েকটি সড়কের সাথে সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে গুলশানের।