শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
 বাংলাদেশে সাংবাদিকরা কতটুকু নিরাপদ
বাংলাদেশে সাংবাদিকরা কতটুকু নিরাপদ

বাংলাদেশে সাংবাদিকরা কতটুকু নিরাপদ

প্রতিষিদ্ধ প্রতিবেদক
প্রকাশের সময় : February 14, 2022 | তালিকা

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাড়িতে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনিকে নৃশংশভাবে হত্যা করা হয়। সাগর তখন মাছরাঙা টিভিতে আর রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের সময় বাসায় ছিল তাঁদের সাড়ে চার বছরের ছেলে মাহির সরওয়ার মেঘ। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি দম্পতি হত্যা মামলার বিচার, চার্জশিট তো দূরের কথা ১০ বছরে নাকি তথাকথিত তদন্তই শেষ হয়নি! ৮৫ বার সময় নিয়েও আদালতে প্রতিবেদন দিতে পারেনি র‍্যাব, ৮৬ বারের জন্য সময় চেয়েছেন। কোনো হত্যা মামলায় ৮৫ বারেও প্রতিবেদন না দিতে পারার ঘটনা দেশের আইন-আদালতের ইতিহাসে নজীরবিহীন।

সাগর-রুনি মামলায় এখন তদন্তকারীরা আদালতে যান না, জিআরও আবেদন করে নতুন তারিখ নেন। সময় বাড়ানোর আবেদনে কোনো কারণও উল্লেখ থাকে না, আবার কখনো কখনো আবেদনও করা হয় না; আদালত কাউকে না পেয়ে নতুন তারিখ দিয়ে দেন। র‌্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা এখন আর সাগর-রুনি হত্যা মামলা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে কথা বলেন না, পরিবারকেও সরকার/প্রশাসন মহোদয় আর কোন আপডেইট দেন না।

র‌্যাব মূলত এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফরেনসিক ও ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট না পাওয়ার নামে মামলাটিকে ঝুলিয়ে রেখেছেন। মার্কিন ল্যাব থেকে ছয় বছর ধরে ডিএনএ রিপোর্ট না আসা, সাহারা খাতুন-মহীউদ্দিন খান আলমগীরের বয়ান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্ত হস্তান্তরের ইতিহাস ও র‍্যাবের ৮৫ বারেও আদালতকে তদন্ত রিপোর্ট হস্তানান্তর করতে না পারার ঘটনা থেকে সহজেই অনুমান করা যায় সরকার ও তদন্তসংস্থার স্পষ্ট অবহেলা এবং অনিচ্ছায় এই মামলার কোন অগ্রগতি হচ্ছে না।

সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রতিষিদ্ধের একান্ত সাক্ষাৎকারে দেশের সাংবাদিকরা মনে করেন , এত বছর পেরিয়েও হত্যাকাণ্ডের তদন্তে অগ্রগতি না হওয়াটা সাংবাদিকদের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে, গত ১০ বছরে বাংলাদেশে অন্তত ১৫ জন সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তার জ্বলন্ত উদাহারন। এই অমীমাংসিত মামলাটি দায়মুক্তির সংস্কৃতির শক্তিশালী অস্তিত্বের একটি প্রমান; সরকার, বিচার বিভাগ, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক কর্মী, গণমাধ্যম, সাংবাদিক সমিতিসহ সবাইকে সাগর-রুনি হত্যার বিচারসহ সাংবাদিকদের পেশাগত ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানাচ্ছে সাংবাদিক সমাজ।